সবাই যুদ্ধ করে জেতার জন্য। কিন্তু আমার যুদ্ধ হারার জন্য। হেরে যাওয়া। আমি হেরে যেতে চাই। আমি জানি, আপনি আমার কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না। অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ভাবছেন, এ আবার কেমন প্রাণী, অদ্ভুত তো!
জয়ন্ত দে
আমি আসলে ভেতর ভেতর একটা যুদ্ধ চালাচ্ছিলাম। যুদ্ধটা অসম। আমার প্রতিপক্ষ খুব দুর্বল। তাদের তেমন কিছুই করার নেই। পারলেই দান ছেড়ে দিয়ে পালায়। আমার প্রতিপক্ষ যখন দুর্বল তখন স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে আমি শক্তিশালী। সাধারণভাবে মানুষ যুদ্ধ করে জেতার জন্য। দুর্বল প্রতিপক্ষ পেলে সে টগবগ করে ফোটে। এই লড়লাম, এই হারালাম।
প্রতিটি যুদ্ধে এক এবং অমোঘ একটিই নিয়ম, সবাই জিততে চায়। এ ছাড়া যুদ্ধে কোনও নিয়ম নেই। সবাই যুদ্ধ করে জেতার জন্য। কিন্তু আমার যুদ্ধ হারার জন্য। হেরে যাওয়া। আমি হেরে যেতে চাই। আমি জানি, আপনি আমার কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না। অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ভাবছেন, এ আবার কেমন প্রাণী, অদ্ভুত তো!
সত্যি আমি অদ্ভুত। আমি মানুষ। তবে অমানুষ নই। কেউ কোনওদিন আমাকে অমানুষ বলেনি। কিন্তু অনেকেই বলেছে বা বলেছেন, বয়েস বেড়েছে কিন্তু মানুষ হওনি। আসলে আমার নিজের ওপর কন্ট্রোল নেই।
শিশুরা যেমন যেখানে সেখানে যে কোনও শারীরিক কম্ম করতে পারে, আমিও সেটা অন্যভাবে করি। আর তার বেশিরভাগটাই বুজকুড়ি কাটি মনে মনে। তারপরই হঠাৎ হঠাৎই আমি হৃদয়ে মগজে কথায় ও সুরে বাড়তে শুরু করি। তখন কেউ আমাকে থামায় না। তারপর সেই কথার ভেতর একটা ঢেউ তুলে আমি ঢুকে পড়ি এক অনন্তলোকে। না, বেশিরভাগ সময়েই সেটা আনন্দলোক বা মঙ্গলালোক হয় না। তার জন্য আমাকে খুব হেনস্থা সামলাতে হয়। আমি কোথা দিয়ে যেন কোথায় বাড়তে শুরু করি— সে জায়গাগুলো ক্যান্সারের গ্রোথের মতো হুহু করে বাড়ে। এই বেড়ে যাওয়াতে আমার কোনও হাত নেই। আমি শুধু ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে হাঁ করে বসে থাকি।
একবার আমার দাদা আমার হাতে তার উড়ন্ত ঘুড়ি আর ঘুরন্ত লাটাই দিয়ে পেচ্ছাপ করতে গিয়েছিল। ক’মিনিটের মামলা। ছাদ থেকে নেমেছে। প্যান্টের চেনা খোলা, মূত্রত্যাগ করে আবার দৌড়ে ফিরে আসা।
ভালো লাগলো ।