কলকাতা জনবিরল হয়ে যাচ্ছিল ক্রমশ। মার্কো তখন ঠিক করেছিল কলকাতা থেকে ভেনিসে ফিরবে রেশম পথ দিয়ে। সড়কপথে কলকাতা, পাটনা, দিল্লি, পাঞ্জাব, সিন্ধু পার হয়ে পুরুষপুর, খাইবার গিরিপথ, গান্ধার, সমরখন্দ, হিন্দুকুশ পর্বত, বাহ্লিক দেশ… মার্কো সেই পথে গিয়ে প্রাচীন রেশম পথ দিয়ে ভেনিসের দিকে অগ্রসর হবে।
অমর মিত্র
ঘুরুয়া মানুষ, হাটেমাঠে ঘোরা মার্কোপোলো, অভিযাত্রী মার্কোপোলো কতকাল ভিনদেশে রয়েছে। মাঝেমধ্যে মনে পড়ে ভেনিস নামের শহরটির কথা। যেমন এখন মনে পড়ছে… আসলে কিছুই মনে পড়ছে না, এত শত বছরে সে প্রায় ভুলে গেছে ভেনিসের কথা। তবু মনে পড়ে শোনা কথা থেকেই। আপনি যেভাবে ভেনিস না দেখে ভেনিস চিনেছেন, মার্কোপোলোও তেমনই চিনেছে সেই শহর। ভেনিস নিয়ে কত কথা শুনেছে সে। কত বিবরণ। গল্পগাথা। মনে হয়, সবই ফিরে আসছে এখন তার কাছে, হারিয়ে যাওয়া মানুষ হারিয়ে যাওয়া ভেনিস। লকডাউনে গৃহে অন্তরীণ মানুষের কাছে আচমকা চলে আসছে কত দূরের মানুষের ফোন। তিরিশ বছর আগের কোনও এক রমাপ্রসাদ ফোন করল কোনও এক কবি অতনুকে। ভুলেই গিয়েছিল অতনু কিন্তু চিনতেও সময় লাগেনি। রমাপ্রসাদ বলল, সে দশ বছর চলচ্ছক্তিরহিত হয়ে গৃহবন্দি, ফোন নম্বর যোগাড় করেছে রহড়ার প্রগতির কাছ থেকে। অতনু কেমন আছ? তোমার কবিতা আমি পড়ি অতনু। তুমি লং ভার্স লেখ তা জানি অতনু। রমাপ্রসাদের এই খবর মার্কো জানে। তিরিশ বছর বাদে রমাপ্রসাদ যেমন খোঁজ নেয়, অতনু কেমন আছ? মার্কোও জানতে চায় ভেনিস কেমন আছে। ৭০০ বছর আগের ভেনিস এখন কেমন আছে?
ভেনিস নামে একটি শহর আছে এই পৃথিবীর কোথাও, সেই শহর আসলে ১১৮টি দ্বীপ। দ্বীপগুলি আড্রিয়াটিক সাগর থেকে আসা জলে ঘেরা। সেই সবই হল ভেনিসের ক্যানেল।
অদ্ভুত সুন্দর গল্প। মন ছুঁয়ে গেল…
মনে শক্তি পেলাম। সবাই আমরা নিতাই হয়ে উঠি।