রমনায় নাশু তাকে একদিন নিয়ে গিয়েছিল। আর এই কানপাশাজোড়া উপহার দিয়ে তাকে আদর করেছিল। মুখে বলেছিল, ‘হামি যে তোকে খুব ভালবাসি রে ফুরু! তোকে ছাড়া হামি জানে বাঁচব না। তুই হলি হামার অন্তরের জান। হামার প্রাণ।’
নীহারুল ইসলাম
বহুদিন এমন বর্ষণ হয়নি। ফুরুরানির মনটার মতোই বহুবছর যাবৎ পুকুর-পুষ্করিণী, খাল-বিল শুকিয়ে খটখট করছিল। নদ-নদীতে জল থাকলেও তা ছিল খুবই সামান্য। একেবারেই স্রোত বইত না। তবে ভূগর্ভ থেকে তোলা জলে মাঠে অল্পস্বল্প ধান ফলত। আর ভাত খাওয়ার জন্যে বরফ-ঢাকা মাছ আসত সমুদ্র থেকে। যাদের সামর্থ্য ছিল, সেই মাছ কিনে খেত। বাকিরা তাকিয়ে দেখত। বড়জোর জোরে শ্বাস টেনে টেনে গন্ধ শুঁকত। রোজ কেয়ামত যে আসন্ন, সবাই তা নিজের নিজের শ্বাসপ্রশ্বাসেই টের পাচ্ছিল। ঠিক এরকম পরিস্থিতির মধ্যে সবাইকে অবাক করে জ্যৈষ্ঠের শেষ সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে জোড়া ঘূর্ণাবর্তের ধাক্কায় আকাশের দখল নিল প্রাক বর্ষার মেঘ। ‘সুবহানাল্লাহ্’ বলে জুম্মাবারে মসজিদে মোনাজাতে বসে আল্লার কাছে শুক্রিয়া আদায় করল তার উম্মতেরা। কেউ কেউ খুশিতে মসজিদে মসজিদে সিন্নি বিতরণ করল পর্যন্ত। আল্লা যে রাহমান ও রাহিম এবং এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর এই মাখলুকাতে তিনি ছাড়া আর যে কেউ মামুদ নেই, তাঁকে ছাড়া কারও কোনও গতি নেই, তা আরও একবার হাড়ে হাড়ে মালুম পেল সবাই।
কিন্তু এ কী! আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ গেল গেল! ভাদ্রও প্রায় দোরগোড়ায়! অথচ একটা দিনের জন্যে কী, একবেলার জন্যেও সেই মেঘ আকাশের দখল ছাড়ছে না।
একদম মাটিগন্ধী প্রেক্ষিতে জমিয়ে বেঁধেছ ভাই নীহারুল। আমার গ্রাম, তোমার গ্রামে তো তফাত নেই তেমন। তফাত শুধু দর্শনে। বাবলার ফল খাওয়ালে গোরু ছাগলের দুধ বাড়ে এ তো আমার অভিজ্ঞতাতেও আছে। চরৈবেতি।
মুগ্ধতা রইল।