সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ
গোঙানির শব্দ, যত দূরেরই হোক, খুব কাছের মনে হয়। যে কষ্ট পায়, তার কোনও দেশ নেই, ভোট নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই। সে জানে ঈশ্বর মানেই পেনকিলার, ধর্ম মানেই একফোঁটা জল, যার জন্য তার জিভ শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। নিজের মায়ের মুখ সে দেখতে পায় প্রতিটি নার্সের মুখে। নিজেরই প্রেমিকা এসে তার জ্বর মাপে। ঘরের জানলা খুলে দিয়ে বলে, আলো আসুক একটু।
গোঙানির শব্দ, যে যন্ত্রণারই হোক, তার কোনও অনুবাদ হয় না। একটা ফাঁকা ঘরে সে শুধুই পেতে চায় তার মাকে। অভিযোগ জানায় এ জীবনের জন্য। মায়ের চোখের জল দেখলে সে দাঁতে দাঁত চেপে বলে, ভাল হয়ে যাব। এবার সূর্য উঠলে, আর রাত হবে না কোনওদিন।
খুব ভোরে, যখন গোঙানির শব্দ ঘুমিয়ে পড়ে, শুকনো পাতার উপর দিয়ে কারা কারা হেঁটে যায়! বুঝি, তারা ঘরে ফিরছে। মাথায় সংসার। খিদের ওজন কত বেশি হলে আর রাস্তা পেরোনো যায় না, এ কথা কেউ কেউ জানে।
এটুকুই মানুষের যুদ্ধসংবাদ। এটুকুই, যুদ্ধবিরতি।
রাশিফল
তোমার সঙ্গে সঙ্গে হেঁটে আসছে একটা দেওয়াল, যার ওপারে তাকানো যায় না। এ দেওয়ালের কোনও পিঠ নেই। যে ফিরে তাকাতে পারে না, তার মতো দুঃখী তুমি নও। তুমি আছ, তাই, দেওয়াল রয়েছে। একটি একটি করে পায়ে, অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যেতে পারো তুমি। চোখে পড়তে পারে কয়েকটি ভীত মুখ, চমকে যাওয়া জীবন, কৌতূহলী অশ্রু।
আমি যে তোমার দিকে আর তাকাতে পারি না প্রভু। মৃত্যুর এত বাজারদর কেন চিত্রগুপ্ত? জীবন কতটা পাঞ্জা কষতে কষতে শেষে এতদূর ন্যাংটা হয়ে যেতে পারে, যে তার নিজের মাংস নিজেই খায়। আর তার পর দুপুরে একঘুম রবিবার মাখতে মাখতে বলে, আমাদের ভবিষ্যতের কথা, সুরক্ষার কথা, স্বাধীনতার কথা। রাতে কি একটু হালকা খাবার খেলে ভাল হয়?
আপাতত, চলো রকে বসি। বহুদূর থেকে যারা মাঝে মাঝে আসে, তাদের কাছ থেকে কিছু কিছু শুনে নেওয়া ভাল। এ রাস্তার শেষ নেই, শুরু নেই। একটি দেওয়াল তুমি তৈরি করেছ, যার ওপারে একটা লন্ঠন জ্বলে আছে হয়তো বা। পায়ের তলায় বালি। অন্ধকারে শুধুই সমুদ্রগর্জন।
কয়েক দিনের মধ্যেই হিসেবনিকেশ হয়ে যাবে, তুমি আলো না অন্ধকার। আপাতত সামনের দিকে তাকাও। দেওয়ালে ঘুণ ধরে গেছে।
অনবদ্য। বিশেষ করে প্রথমটি।
অত্যন্ত সুন্দর দুটি কবিতা পড়লাম।