ঠিক সেই চরম মুহূর্তে আবার সেই ক্যাঁ-ক্যাঁ-ক্যাঁ-ক্যাঁ আওয়াজ শুনতে পেয়েছিল তারা। ওয়াচ টাওয়ারের মাথায় দাঁড়িয়ে তারা তাকিয়ে ছিল নদীর উল্টো পারের বনের দিকে। ডিমের কুসুমের মতো কী যেন একটা ফেটে পড়ছে আকাশের বুকে।
পার্থজিৎ চন্দ
জাহাঙ্গীরপুরী, হনুমান চালিশা পাঠ, তার বিরুদ্ধে সরকারি হস্তক্ষেপ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের খবর মোটামুটি সকাল থেকে পালা করে দেখিয়ে চলেছে চ্যানেলটি। নিউজ-অ্যাঙ্করের কথা বদলে যাচ্ছে মাঝে মাঝে, কিন্তু ছবিগুলি প্রায় মুখস্থ হয়ে গেছে এতক্ষণে।
পরপর সাজালে সেগুলি যেমন হবে—
একটি বুলডোজারের মাথা গুঁড়িয়ে দিয়ে চলেছে একের পর এক ছোট ছোট কাঠামো, তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে সেগুলি।
বুলডোজারের কাজ করার পদ্ধতিটিও মুখস্থ হয়ে গেছে। সে প্রথমে মাথা দিয়ে ধাক্কা দেবে একটা দোকানের সান-শেডের কাছ বরাবর। তার পর আর একটা জোরালো ধাক্কায় গুঁড়িয়ে দেবে সেটিকে।
মুহূর্তের মধ্যে মুখ ঘুরিয়ে সে তাক করছে একটি ঝুপড়ি, তার পর অন্য একটি ফ্রেম। রিপারগুলি যেন প্রত্ন কোনও প্রাণীর দাঁত, বিশাল। কন্টেনার যেন তার হাঁ-মুখ। কংক্রিটের স্তূপ থেকে শুরু করে গ্রিল, লোহার ফ্রেম, দরমার আড়াল, অ্যলুমিনিয়ামের থালা, কলসি… সব, সব সে মুখে করে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে কিছুটা দূরে। উগরে ফেলছে সেখানে।
ফ্রেমে দেখা যাচ্ছে বুলডোজারের হাঁ-মুখে থালা-বাটি-গ্লাস, জামাকাপড়ের পুঁটলি। কয়েকটা হাত দ্রুত তার ভেতর থেকে কিছু খুঁজে চলেছে।