রকের মজলিশ যেন লোক-আদালত। দুনিয়ার তাবড় রাষ্ট্রনায়ক থেকে হলি-বলি-টলিউডের সেলেব্রিটিদের বিচার করে তৎক্ষণাৎ রায়দান হয়ে যেত। কথার তোড়ে হার মানবে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের ওয়ার্ক কালচারও।
গৌতম কুমার দে
পর্ব ১৪
কলকাতার রক
কলকাতা থেকে হারিয়ে গেছে রক। সেইসঙ্গে রকের আড্ডাও আজ অতীত। গত সিকি শতকে হাজারে হাজারে নতুন বাড়ি হয়েছে, হচ্ছে, কিন্তু একটাও রক আর তৈরি হতে দেখলাম না। অচল আধুলির মতো যে দু-একটা রক আজও চোখে পড়ে তা ওই উত্তর কলকাতায়। বাড়ির মালিকের সস্নেহ প্রশ্রয়ে কোনওক্রমে টিকে আছে তারা। তবে প্রোমোটারের শ্যেন দৃষ্টি এড়িয়ে কত দিন টিকে থাকবে তারা, বলা মুশকিল।
সমাজে রক বা রোয়াকের সংখ্যা যত লঘু হতে থাকল, কথ্য ও সাহিত্যের ভাষা থেকেও ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকল শব্দটি। বর্তমানে পঁচিশ-তিরিশ বছর বয়েসি খুব কম ছেলেকেই পাবেন যাদের মুখে শব্দটা উচ্চারিত হতে শুনবেন। অথচ মাত্র সাড়ে তিন-চার দশক আগেও এই রকই ছিল বাঙালি যুবকের কাছে যৌবনের বৃন্দাবন। একচিলতে রোয়াকে বসেই চলত রাজা-উজির বধ করা থেকে তাস-দাবার আড্ডা। সে সময় কোনও কোনও বাড়ির অন্দরমহল থেকেই বাড়ির ঝি-চাকর কিংবা ছোট ছেলেপুলেদের হাত দিয়ে রকে ‘চা’-এর সঙ্গে ‘টা’ সাপ্লাই হত।